Friday, October 8, 2010

Farooki VS. Tisha




হুমায়ুন সাধুর দেওয়া বক্সিং গ্লাভস দুটি ভীষণ পছন্দ দুজনার, গ্লাভসের গায়ে লেখা আছে 'যুদ্ধের আগে যুদ্ধের সরঞ্জাম'
ছবি : কাকলী প্রধান


সংসার বড় 'ড্যাঞ্জারাস'!

এম এস রানা

১৫ জুলাই সকাল থেকেই বদলে গেল সব। দিনটাই যেন কেমন কেমন। সকালে ঘুম ভাঙতেই পরিবর্তনের ছাপটা স্পষ্ট। বারিধারার বাড়িটা অনেকটাই ফাঁকা ফাঁকা। সবাই বাইরে গেছে বিয়ের নানা আয়োজন সাজাতে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না সরয়ার ফারুকী। পত্রিকা পড়লেন। খানিকটা পায়চারি করলেন। সন্ধ্যায় বসলেন গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে।। হোটেল ওয়েস্টিনে নবদম্পতিকে শুভেচ্ছা জানাতে এলেন শিল্পী ও কলাকুশলীরা। অনুষ্ঠান শেষে রাতে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও তিশা উঠলেন বনানীর নতুন ফ্ল্যাটে। নতুন করে সাজানো, নতুন সংসার। পুরোটা সাজানো-গোছানো হয়নি এখনো। তবু বুক শেলফে বই উঠেছে, দেয়ালে দেয়ালে পেইন্টিং আর শোপিস ঝুলেছে, রান্নাঘরে চুলা জ্বলেছে। এখন স্ত্রীর ডাকে ঘুম ভাঙে সরয়ার ফারুকীর। আর স্বামীর জন্যই পরম মমতায় প্রয়োজনীয় সবটা তৈরি রাখেন তিশা। নিজ হাতে ফ্ল্যাট সাজিয়েছেন ফারুকী-তিশা দম্পতি। বাজার ঘুরে পছন্দ করে পর্দা কিনেছেন। কাঠ কিনে মিস্ত্রি ডেকে নিজ হাতে ডিজাইন করে ফার্নিচার গড়েছেন। আর কোন জিনিসটা কোথায় বসবে, নিজেরাই তা পছন্দ করেছেন। ফলে পুরো ফ্ল্যাটটা হয়ে উঠেছে দুজনের পছন্দের আসবাবে ঠাসা স্বপ্ন-সুখের ঘর।
১৫ জুলাই ছিল সরয়ার ফারুকী ও তিশার গায়ে হলুদ। ১৬ জুলাই হোটেল ওয়েস্টিনে বিয়ে-পরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। ১৮ জুলাই তেজগাঁওয়ের নভো কনভেনশন সেন্টারে আরো একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। পরদিন সকাল থেকেই দুজনার শুটিং শুরু। তিশা ছুটেছেন উত্তরায়, আর সরয়ার ফারুকী পুবাইলে। তিশা অভিনয় করলেন ঈদের একটি টিভি নাটকে।। রাতে বাসায় ফিরে বিশ্রাম, দুষ্টুমি আর হৈচৈ। পেশাগত জীবনে খুব একটা পরিবর্তন না এলেও দুজনার জীবনযাপনের রুটিনটা বদলে গেছে অনেকখানি।
সরয়ার ফারুকী জানালেন, 'আগে ঘুম ভাঙত তিশার ফোন পেয়ে। এখন সে পাশ থেকে ডেকে তোলে। আগে রাতের ডায়াল লিস্টে তিশার নম্বর থাকত অসংখ্যবার, এখন তিশা পাশেই থাকে তাই ফোন করা হয় না।'
'সংসার যে করছি এটাই এখনো বুঝে উঠতে পারছি না'_হেসে জানালেন তিশা, 'মনে হচ্ছে আগে যেমন প্রেম করতাম, এখনো তাই করছি। ফারুকীর এক্সাইটমেন্ট দেখে আমার অনেক ভালো লাগছে। আমার সংসার, আমাদের সংসার! যখন যেভাবে পারছি, টুকটুক করে গোছাচ্ছি। সরয়ার ফারুকীও সাহায্য করছে। ও যে এতটা সংসারী হয়ে উঠবে বুঝতে পারিনি।' দাম্পত্য কলহ হয়েছে কি না জানতে চাইলে ফারুকী বললেন, 'এখনো হয়নি, হয়তো হবে। তবে আমরা দুজন দুজনকে এতটাই জানি যে কলহ হলেও তা দীর্ঘ হবে না।'
এরই মধ্যে তিশার মা এলেন মেয়ে আর মেয়ে-জামাইয়ের খোঁজ নিতে। তিশা বললেন, 'আমরা দুজন তো আমাদের শাশুড়িদের আদরের কারণে এখন পর্যন্ত বাসায় ভাত রান্না করতে পারিনি। দুজনই প্রতি বেলায় এত এত খাবার পাঠিয়ে দেন! সেই খাবার শেষ করতে আমরা ঘনিষ্ঠদের ডেকে এনে একসঙ্গে খাই।' একটু পরেই নাস্তা এল। চায়ের কাপে চুমুক দিলেন তিশা। সরয়ার ফারুকীর হাতে দৈনিক পত্রিকা। কথার ফাঁকে সরয়ার ফারুকী উঠে দাঁড়ালেন। রান্নাঘরের সামনের টেবিলটা মুছতে মুছতে বললেন, "সংসার বড় 'ড্যাঞ্জারাস' জিনিস। এখন যখন দেখি শখের টেবিলটার ওপর একটু পানি পড়েছে বা চা ছিটকে পড়েছে, আমার বুকের ভেতর খঁচ করে ওঠে। টিস্যু নিয়ে নিজেই মুছতে শুরু করি। ভেবেছিলাম সংসারে যা যা লাগে তিন দিনে সব কিনে ফেলব। এখন দেখছি টাকা দিয়ে তিন দিনে সংসার গোছানো যায় না। আমাদের মা-বাবারা কত কষ্ট আর ধৈর্য নিয়ে তাঁদের সংসার গুছিয়েছেন, এখন বুঝতে পারছি। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসছে।" পরদিন বিয়ে আর সরয়ার ফারুকী শুটিং করলেন একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের

বিয়ের ছবি : নয়ন কুমার ও মিথুন

No comments:

Post a Comment