Monday, May 31, 2010

hot news: "FAROOKI+TiSHA" biye 16th july

মিয়া বিবি রাজি

একজন নির্মাতার আমন্ত্রণে শুটিং দেখতে গিয়েছিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেখানে অভিনেত্রী তিশাকে দেখে মুগ্ধতায় ছেয়ে গেল চোখ। সেই মুগ্ধতার রেশটা রয়ে গেছে আজও। প্রেমে মজেছেন দুজন, এখন কেবল ১৬ জুলাইয়ের অপেক্ষা। সেদিন বিয়ে করছেন তাঁরা দুজন। লিখেছেন এম এস রানা, ছবি তুলেছেন কাকলী প্রধান
গল্প শুরুর গল্প
তিশার সঙ্গে পরিচয় হয়েছে বেশ কিছু দিন। দুজনেই বুঝতে পারছেন প্রেমে পড়েছেন। কিন্তু মুখ ফুটে বলার সাহস হচ্ছে না। দুজনেই ইনিয়ে-বিনিয়ে তাদের মনের কথাটা বোঝানোর অন্তত চেষ্টা করেন। তিশা বলেন, 'আমার বড় বোন থাকলে তাঁর সঙ্গে আপনার বিয়ে দিতাম। সরয়ার ফারুকী বলেন, 'তোমার বড় বোন থাকলে তাকে আমি অবশ্যই বিয়ে করতাম। কিন্তু কতদিন!
একদিন ২০০৫ সালের ৩১ অক্টোবর, কালিগঞ্জে এক শুটিংয়ে তিশাকে সোজাসাপ্টা জিজ্ঞেস করলেন সরয়ার ফারুকী, 'আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই, তুমি কি আমাকে বিয়ে করবা?' হতভম্ব তিশা নিজেকে সামলে নিতে ১৫ সেকেন্ড সময় নিলেন। তারপরই সম্মতি জানালেন। ব্যস শুরু হয়ে গেল একটি প্রেমের গল্প।
ফারুকী বললেন, 'এর আশপাশে আরো কিছু গল্প আছে। আমরা তখন '৬৯'-এর শুটিং করছি। সিদ্ধান্ত নিলাম আর ধূমপান করব না। ঘরে প্রতিটি আনাচে কানাচে লিখে রাখলাম 'ডোন্ট স্মোক'। যেখানেই যাই, ওই লেখা। বালিশের নিচে, বাথরুমে। ড্রেসিংটেবিল, তোশকের নিচে, দরজায়_সব জায়গায়। ততদিনে তিশার কাছে খুলে বললাম জীবনের সব পাপ-পূণ্যের কথা। প্রেমের জন্য ধূমপান ছাড়ছি। কষ্ট নেই। কিন্তু মেজাজটা কেমন খিটমিটে হয়ে গেল। তিশা এলো সেবিকার মতো। তারপর ধীরে ধীরে কোথা থেকে কী হলো! এখন তো দেখছি আমাকেই সারা জীবন তার সেবা করে যেতে হবে।' হাসতে লাগলেন ফারুকী।

প্রথম প্রথম
"ফারুকী তো আমাকে আজ পর্যন্ত 'আই লাভ ইউ ' বলতেই পারেনি। প্রেম শুরু হয়েছে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে।" হাসতে হাসতে বললেন তিশা। "প্রথম দিনেই সে আমার সঙ্গে তুমুল ঝগড়া করেছে। নানা বিষয়ে নানা জনের ব্যাপারে আমাকে বলছে। বুঝতে পারলাম মিয়া সাহেবের মেজাজ খারাপ। একটু পর পর এটা-সেটা নিয়ে হুকুম জারি। পরদিন আবার সব ঠিকঠাক। 'নো ম্যান্ডস ল্যান্ড' রিলিজের দিন (২০০৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি) ছিল ভালোবাসা দিবস। সেদিনই আমি মাকে জানাই আমাদের প্রেমের কথা। আমি আমার সব কিছুই মায়ের সঙ্গে শেয়ার করি। আমার মা কখনোই কোনো বিষয়ে জোর করেননি। তবে এ ব্যাপারে কিছু শর্ত দিয়েছিলেন আমাদের ভালোর জন্যই। এরপর শুরু হলো নতুন ঝামেলা। আমরা প্রেম করছি। নানা জনে জানতে চায়। আমরা এর কাছে লুকাই, ওর কাছ থেকে লুকাই। মুখ ফুটে বলতে পারছি না কাউকে। কী কষ্ট!"
ফারুকী বললেন, 'আসলে প্রেম বিষয়টা কেমন বাচ্চাদের মতো। নিজেরা আগে নিজেদের ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়ে তো লোকজনকে বলে বেড়ানোর কিছু নেই। আমরা রাত জেগে কথা বলছি। আমি তাকে এসএমএস করি, সে আমাকে নানা ধরনের (কী ধরনের বলা যাবে না!) জোকস পাঠায়। দুজনে মিলে সংসার নিয়ে ডিসকাস করি। এমনকি আমরা আমাদের বাচ্চার নামও ঠিক করে ফেলেছি। ছেলে হলে পাপ্পু আর মেয়ে হলে চিঙ্কি।'

অতঃপর বিয়ে
দুই পরিবারের সবাই ততদিনে জানাজানি হয়েছে সব। এবার আলোচনা বিয়ে নিয়ে। তিশা জানালেন মজার তথ্য, 'প্রতি বছরই সরয়ার ফারুকী বলে, এ বছরই বিয়ে করব। এভাবে বেশ কয়েক বছর হলো। কিন্তু বিয়ে আর করা হয় না।
এ বছরের শুরুতেই ফারুকী জানাল আমার মনে হয় তোমার সঙ্গে আমার বিয়েটা এ বছরও হবে না। আর দেখুন কেমন করে বিয়ের সব ঠিকঠাক হয়ে গেল!'
ফারুকী বললেন, '১০-১৫ দিন আগে তো চরম ফ্রাস্টেটেড। দুজনে কথা বললাম। আসলে আমরা দুজন দুই রকম। তার চেয়ে বরং দুজন আলাদা হয়ে যাই।'
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারদিন কোনো যোগাযোগ করলেন না তাঁরা। যখন ঘুমাতে গেলেন, ঘুম আর আসে না। শেষ পর্যন্ত ফোন। দিনটিকে তাঁরা নাম দিয়েছেন একদিনের বিচ্ছেদ। অবশেষে ১৮ মে দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হলো ১৬ জুলাই বিয়ে করবেন তাঁরা। আনুষ্ঠানিকতা হবে দুই বার। একটি হোটেল ওয়েস্টিনে। অন্যটি সরয়ার ফারুকীর নিজ এলাকা নাখালপাড়ায়।
একটি সাজানো বাড়ি
এরই মধ্যে বনানীতে সরওয়ার ফারুকী সাজিয়ে তুলছেন নিজের ফ্ল্যাট। কেমন হবে সংসার, কার কী দায়িত্ব_সেটাও ঠিকঠাক। ফারুকী মশারি ছাড়া ঘুমাতে পারেন না, আবার তিশা মশারি সহ্য করতে পারেন না। ছাড় দিলেন ফারুকী। মশারি থাকবে না ঘরে। তিশার ঘরে এসি লাগে। ফারুকীর এসি সহ্য হয় না। সিদ্ধান্ত হলো এসি থাকবে কিন্তু ফারুকী যখন থাকবে এসি ছাড়া হবে না। বাসায় টিভি থাকবে দুটি। কারণ ফারুকী খবর দেখে শুরু করে বিজ্ঞাপন পর্যন্ত দেখেন, আর তিশার পর্যন্ত টিভি সিরিয়াল।
এভাবেই দুজনের পছন্দমতো সাজিয়ে তুলছেন নিজেদের ফ্ল্যাট। ফারুকী বললেন, 'একটা বিষয়ে এখনো মিল হতে পারিনি। শুটিং নিয়ে। আমার বক্তব্য হলো একজন ডিরেক্টরের বাসায় শুটিং হবে এটাই স্বাভাবিক।' তিশা থামিয়ে দিয়ে বললেন, 'কক্ষণো না, পেশাগত কাজটা অন্য কোথাও হবে। বাড়িতে শুটিং কক্ষণো না।'

ভবিষ্যতের শুরু
ফারুকী জানালেন আমাদের অনেক বিষয়ে অমিল। তাতে কিছু যায়-আসে না। আমরা আসলে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এক সংসার গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিইনি। আমরা কখনো আমাদের অমিলটাকে মিল করার চেষ্টা করি না। করব না।

No comments:

Post a Comment